Co-occurring Disorders

Co- occurring disorder হল একটি ক্লিনিকাল অবস্থা যা বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে।  এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা পৃথক পৃথক দুইটি রোগে একসাথে ভোগে। একটি হলো ডিপ্রেশন আরেকটি হলো মাদকাসক্তি। উদাহরণস্বরূপ, ডিপ্রেশনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগই মদ্যপান, মাদক গ্রহণ এবং পেইন কিলার আসক্তির সাথে লড়াই করে। Co-occurring disorder এ আক্রান্ত রোগীরা অনেক গুরুতর অবস্থার সম্মুখীন হয় যার দরুন দীর্ঘ সময়ের জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

মানসিক ব্যাধিগুলোর মধ্যে anxiety disorders, depression, bipolar disorder, ADHD, schizophrenia ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। SAMHSA (Substance Abuse and Mental Health Services Administrations) এর 2018 National Survey on Drug Use and Health এর মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় 9.2 মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায় ।

আসক্তি জনিত ডিসঅর্ডার হওয়া ২০.৩ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে, এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ মানসিক অসুস্থতায় ভোগে। দুর্ভাগ্যবশত, এই রোগে আক্রান্তের মধ্যে ৫০% এরও বেশি মানুষ কখনোই উভয় রোগের চিকিৎসা একত্রে পাননা। Co-occurring disorder এর চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় বেশিরভাগ রোগীদের পক্ষে তা গ্রহণ অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।

বিশেষজ্ঞগণ ৩টা সম্ভাব্য প্রক্রিয়া চিহ্নিত করেছেন যা ব্যাখ্যা করতে পারে কেন এই রোগ হয়ে থাকে।

১. ওভারল্যাপিং রিস্ক ফ্যাক্টর – আসক্তি জনিত ব্যাধি ও অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্য অবস্থার ঝুঁকি প্রায়ই ওভারল্যাপ করে। এর মধ্যে জেনেটিক্সের পাশাপাশি পরিবেশগত কারণগুলো ও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে, যেমন- বিভিন্ন ট্রমার এক্সপোজার, যা একজন ব্যক্তির এই সমস্যাগুলির বিকাশের সম্ভাবনাকে আরো বেশি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

২. মানসিক যন্ত্রণা মোকাবেলা করার জন্য তারা মাদকদ্রব্যের দিকে ধাবিত হয়। এতে কোন সুফল পাওয়ার পরিবর্তে অবস্থা আরো খারাপ হয়। যা স্বল্প বা দীর্ঘ সময় পরে লক্ষণ প্রকাশ করে।

৩. ড্রাগ- প্ররোচিত মস্তিষ্কের পরিবর্তন : মস্তিষ্কের যেসব অঞ্চলে মানসিক রোগের উদ্ভব হয়, মাদকদ্রব্য সেসব অঞ্চলকে আরো উদ্দীপ্ত করে। এতে মস্তিষ্ক প্রভাবিত হয়ে মানসিক রোগের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।

 

কিছু উল্লেখেযোগ্য Common Co-occurring Disease গুলো হলো:

অনেকের অন্তর্নিহিত মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, মাদক ও অ্যালকোহলের অপব্যবহারের দিকে ধাবিত করে। মানুষ তাদের উদ্বেগ, ব্যথা, অপরাধবোধ এবং লজ্জা সহ বিভিন্ন ধরনের আবেগ এবং অনুভূতির সাথে মোকাবেলা করতে এসব দ্রব্যের অপব্যবহার করে।

১. ডিপ্রেশন : ডিপ্রেশন বা বিষন্নতা সারা বিশ্বে সবচেয়ে সাধারন মানসিক ব্যাধিগুলোর মধ্যে একটি যা বিশ্বব্যাপি লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিক করে। অনেকে মানসিক ব্যথা ভুলতে মাদকের আশ্রয় নেয়। এসবের প্রভাব শেষ হওয়ার পর বিষন্ন ও ম্লান অনুভূত হয়, একে Substance Induced Depression বলে। এর ফল স্বরূপ মাদকের ব্যবহারকে ট্রিগার করে। কারণ ব্যবহারকারী এই বিষন্ন অনুভূতি এড়াতে চায়। এই চক্রের মাধ্যমে রোগের সৃষ্টি এবং অবস্থা গুরুতর হয়।

২. অ্যানেক্সাইটি : উদ্বেগ থেকে নিস্তার পেতে ডাক্তার বিভিন্ন ঔষধ দিয়ে থাকেন যা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হয়। কিন্তু সেই মাত্রা থেকে বেশি গ্রহণ করলে এবং এতে অভ্যস্ত হলে তা আসক্তিতে পরিণত হয়। এবং সেই আসক্তি অ্যানেক্সাইটি আরো বাড়িয়ে তোলে।

৩. আত্মহত্যা : মাদকাসক্তি একজনকে আশাহীন, অযোগ্য এবং আত্মঘাতী বোধ করাতে পারে, যা থেকে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে।

৪. পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD)-

PTSD হল উদ্বেগ এবং স্ট্রেসজনিত অবস্থা যা বিকশিত হয় বিভিন্ন দুর্ঘটনা বা দুঃখজনক ঘটনা থেকে। যেমন- জীবন- হুমকির অভিজ্ঞতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, হিংসাত্মক অপরাধ, যানবাহন দুর্ঘটনা, বুলিং ইত্যাদি। মানসিক, শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের ফলে PTSD তীব্রতর হতে পারে। এসব স্মৃতি ভুলতে এবং যন্ত্রণা থেকে নিস্তার পেতে মাদকের উপর নির্ভর করে যা অবস্থা আরো খারাপের দিকে নিয়ে যায়।

৫. Eating Disorder: খাদ্য গ্রহণ সম্পর্কিত রোগগুলি হচ্ছে- অ্যানোরেক্সিয়া, বুলিমিয়া ইত্যাদি। বুলিমিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অনেক বেশি পরিমান খাবার খেয়ে ফেলে। পরে বমি করে। ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। অ্যানোরেক্সিয়াতে আক্রান্ত ব্যক্তি ওজন বাড়ার ভয়ে খুবই কম পরিমাণ খাবার খেয়ে থাকে। এসব রোগে ভুক্ত রোগীরা খাওয়ার ইচ্ছা দমনে মাদকের উপর নির্ভর করে যা Eating Disorder এর অবস্থা গুরুতর করে।

কারণ :

মানসিক ব্যাধি বা আসক্তি জনিত ব্যাধি, এদের যেকোন একটি প্রথমে দেখা দিয়ে অপরটির সৃষ্টির কারণ তৈরি করতে পারে। যে সকল কারণে ব্যাধিটি দেখা দিতে পারে-

১. যেকোন প্রকার মানসিক রোগ।

২. যেকোন প্রকার মাদকের আসক্তি।

৩. উপরোক্ত যেকোন রোগের চিকিৎসার অপ্রতুলতা।

৪. বংশগত ইতিহাস।

 

উপসর্গ :

১. একটির রোগের জন্য আরেকটি বারবার ফিরে আসে।

২. সামাজিকভাবে নিজেকে এক ঘরে করে ফেলা।

৩. পরিবার কেন্দ্রিক সমস্যা বেড়ে যাওয়া।

৪. চাকরি, পড়াশোনা ইত্যাদির প্রতি অবহেলা।

৫. মাদক গ্রহণ বন্ধ করতে না পারা, স্বাস্থ্যহানির পরও মাদকদ্রব্য বর্জন করতে পারে না।

৬. পছন্দের কাজে আগ্রহ না জাগা।

৭. ঘুম এবং খাওয়ার অভ্যাসের পরিবর্তন হওয়া।

৮. মেজাজ খিটখিটে থাকা।

 

চিকিৎসা :

সাধারণত মানসিক ও আসক্তি জনিত রোগের একসাথে চিকিৎসা করা উচিত। এতে একটির প্রভাবে আরেকটির ফিরে আসার সম্ভাবনা কমে। কোন ব্যক্তির রোগের অবস্থা, উপসর্গ, বয়স, মাদকের ধরন ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে সবথেকে কার্যকর চিকিৎসা হচ্ছে Behavioral therapy. এতে বিভিন্নভাবে তাদের নিজের অবস্থা সম্পর্কে অবগত করানো হয় এবং ঋনাত্বক আচরণগুলো কমিয়ে পরিবার ও সমাজের গ্রহণযোগ্য অবস্থায় আনা হয়। এর সাথে বিভিন্ন ঔষধের সাহায্যে মাদকের প্রতি আসক্তি নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং মানসিক রোগের বিভিন্ন উপসর্গ নিরাময় করা হয়।

 

প্রাপ্ত বয়স্কদের কিছু Behavioural therapy হল-

১. Cognitive Behavioural Therapy (CBT)- এর লক্ষ্য হল মানুষকে অযৌক্তিক চিন্তাভাবনা এবং আচরণ পরিবর্তন করে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শেখানো হয়।

২. Dialectical Behaviour Therapy (DBT)-

DBT রোগীকে তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করে তীব্র আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা এবং আত্ম ধ্বংসাত্মক আচরণ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

৩. Assertive Community Treatment (ACT)-

এটি সম্প্রদায় ভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার একটি রূপ যা রোগীর অবস্থা সম্বন্ধে অন্যদের অবগত করে এবং এর মধ্য দিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়।

৪. Therapeutic Community (TC)-

এটি হল দীর্ঘমেয়াদী আবাসিক চিকিৎসার একটি সাধারণ রূপ। যা ব্যক্তির মধ্যে স্বাস্থ্যকর মূল্যবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি এবং আচরণ বিকাশে সহায়তা করবে।

৫. Contingency Management (CM)-

কাঙ্ক্ষিত আচরণের জন্য পুরষ্কার প্রদান করে স্বাস্থ্যকর আচরণকে উৎসাহিত করবে।

 

Co-occurring disease এর সাথে জীবনযাপন করা কঠিন এবং হতাশাজনক হতে পারে, তবে উপযুক্ত চিকিৎসার দ্বারা স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সম্ভব।

To know more disorders, click

 

 

More from Author

No data was found
Address:
86/1 RK Tower, Bir Uttam C. R. Datta Road, Banglamotor, Dhaka -1205
Get Connected
Groups

© All rights reserved 2022

Developed by      Aachol Foundation